ই নামজারি আবেদন [Online Mutation]

ই নামজারি আবেদন

ই নামজারি আবেদন অথবা খারিজের আবেদন, Online Mutation যেটাই বলেন না কেন দুটি একই। ইংরেজিতে বলা হয় ই নামজারি/ মিউটেশন, আর বাংলাতে বলা হয় খারিজ। বাংলাদেশের সকল জনগণ অনলাইনের মাধ্যমে ই নামজারির আবেদন করতে পারবেন। পূর্বে ম্যানুয়ালি আবেদন করা হতো। কিন্তু বর্তমানে ডিজিটালাইজেশন এর পর থেকেই অনলাইনের (online) এর মাধ্যমে সকল ধরনের আবেদন প্রক্রিয়া চালু করেছে। দলিল রেজিস্ট্রি করার পর সেই দলিলটি খারিজ করে নিজের নামে করার নামই হলো ই নামজারি, নামখারিজ, Mutation। Online Mutation করতে এখনই এই নিয়মটি ভালভাবে জেনে নিন। A link has to be used for online withdrawal or mutation. You can complete the application process by clicking on this www.land.gov.bd link.

ই নামজারি (E-Namjari) আবেদন প্রক্রিয়া

ই নামজারি আবেদন করতে হলে প্রথমে রেজিস্ট্রি কৃত দলিল সংগ্রহ করতে হবে। মানে আপনি যে দলিল নিজের নামে রেজিস্ট্রি অফিসে রেজিস্ট্রি করেছেন সে সকল প্রথমে সংগ্রহ করবেন। এবং দলিলে উল্লেখিত  প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট গুলা সংগ্রহ করবেন।

দলিল পত্র এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সংগ্রহ করা প্রয়োজন সেই সকল ডকুমেন্টসের বিস্তারিত বর্ণনার নিচে বর্ণনা করা হয়েছে আপনারা সেগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ সকলে পড়ে নিবেন। দলিলের সাথে সম্পর্কযুক্ত সকল প্রমাণপত্র আপনাকে সংগ্রহ করতে হবে। এরপর আবেদনের (Online Mutation) এর সাথে সবগুলো যুক্ত করে এসি ল্যান্ড বরাবর আবেদন করতে হবে। আপনাদের বিস্তারিত তথ্য নিচের দিকে রয়েছে।

 

ই নামজারি আবেদন করতে যেসব কাগজপত্র প্রয়োজন

ই -নামজারি [E Namjari] করতে হলে আপনাকে পুরো প্রসেস জানতে হবে তা না হলে আবেদন করতে পারবেন না। আবেদনে যদি একটু ভুল ভ্রান্তি হয়ে থাকে তাহলে খাবে কিন্তু বাতিল হতে পারে অথবা ভুল হতে পারে। ভুল বলতে এখানে আপনার জমির পরিমাণ অথবা অন্যান্য বিষয়বস্তু ভুল হতে পারে। তাই আবেদনের পূর্বে অবশ্যই সঠিক নিয়ম মেনে আবেদন করতে হবে। আবেদনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পয়েন্ট আকারে দেওয়া হল:

১। প্রথমে যে দলিলটি নাম খারিজ অথবা ই নামজারি (Online Mutation) অথবা E-Namjari করবেন সে দলিলটি রেজিস্ট্রি কৃত হতে হবে।
২। উক্ত দলিলের দাতার বিভিন্ন তথ্য যেমন উক্ত দাতার নামে কোন রেকর্ড আছে কিনা সেগুলো সংগ্রহ করতে হবে।
৩। এরপর উক্ত দাতার নামে খাজনা পরিশোধ আসে কিনা সেটা দেখতে হবে এবং খাজনার রশিদ সংগ্রহ করতে হবে।
৪। যে দাগে জমি কিনবেন উক্ত দাগে জমে আছে কিনা এবং সঠিকভাবে নামজারি করা আছে কিনা সেগুলো যাচাই করবে।
৫। উক্ত দাতার তথ্য ইউনিয়ন ভূমি অফিস এর মাধ্যমে জানতে পারবেন।
৬। জমির দলিল, রেকর্ড যেমন আরএস এবং প্রস্তাবিত খতিয়ান, এবং খাজনার রশিদ সংগ্রহ করবেন।
৭। যার কাছ থেকে জমি কিনবেন তার কাছে থেকে পূর্বের ফটোকপি চেয়ে নিবেন।
৮। আপনি যদি ওয়ারিশ সূত্রে মালিক হয়ে থাকেন তাহলে আপনার বাবা অথবা দাদার মৃত্যুর ওয়ারিশান সার্টিফিকেট পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন থেকে সংগ্রহ করতে হবে।
৯। ওয়ারিশ সূত্রে আবেদন,  ক্রয়-বিক্রয়, এককালীন, দানপত্র হেবা, নামজারিয়া আবেদন ভিন্ন হয়ে থাকে।
১০। উপরের সকল প্রমাণপত্র সংগ্রহ করার পর স্ক্যান করতে হবে। স্ক্যান ফাইলটা অবশ্যই পিডিএফ হতে হবে।
১১। এরপর  www.land.gov.bd এই ওয়েবসাইটটি কম্পিউটারে টাইপ করতে হবে।

ই নামজারী আবেদন
উপরের লিংকটি টাইপ করে প্রবেশ করতে হবে

১২। উক্ত লেংটি ওপেন হওয়ার পর  ভূমি সেবার বিভিন্ন অপশন দেখা যাবে।
১৩। ই নামজারি (E-Namjari) অপশনে ক্লিক করতে হবে।

 

ই নামজারি আবেদন
ই নামজারী অপসনে ক্লিক করতে হবে

১৪। ই নামজারির (E- Namjari) প্যানেল ওপেন হয়ে যাবে।
১৫। উপরের দিকে আপনি যে দলিলটি নামজারি করবেন সেখানে টিক চিহ্ন দিবেন।
১৬। এরপর  আপনি যদি ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে হয়ে থাকেন তাহলে জাতীয় পরিচয় পত্র টাইপ করতে হবে এবং জন্ম তারিখ। যদি ১৮ বছরের নিম্ন হয়ে থাকে তাহলে জন্ম নিবন্ধন টাইপ করতে হবে।
১৭। তাহলে একজন প্রতিনিধি সাহায্য নিয়ে আবেদন করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রতিনিধির জাতীয় পরিচয় পত্র এবং জন্ম তারিখ ব্যবহার করতে হবে।
১৮। আবেদনে অবশ্যই সঠিক মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করতে হবে। কারণ উক্ত নাম্বারে একটি OTP কোড প্রেরণ করা হবে।

ই নামজারী আবেদন
Otp কোড বসাতে হবে

১৯। সবকিছু ঠিকঠাক পূরণ করার পর পরবর্তী ধাপে ক্লিক করতে হবে।
২০। পরবর্তী ধাপে ক্লিক করার পর আপনার মোবাইলে ওটিপি কোড প্রেরণ করা হবে।
২১ । এরপর উক্ত মেসেজ অপশন থেকে ওটিপি কোড আবেদনের কোর্টের ওটিপি  কোডের খালি ঘরে বসাতে হবে।
২২। সঠিক ওটিপি কোড ব্যবহার করার পর আপনাকে দ্বিতীয় ধাপে নিয়ে যাওয়া হবে।।

ই নামজারী আবেদন
খতিয়ান নম্বর, জমির পরিমান ও দলিল নম্বর লিখতে হবে

২৩। এরপর আপনি যে মালিকের কাছ থেকে জমি কিনছেন সে মালিকের খতিয়ান নম্বর, দাগ নম্বর লিখতে হবে এবং  সেই দাগে যতটুকু জমি আপনার নামে কিনেছেন তার পরিমাণ লেখতে হবে। যদি একাধিক দাগ এবং পরিমাণ লিখতে হবে।
২৪। এরপর যে দলিল খারিজ করতে যাচ্ছেন সে দলিল নম্বর এবং দলিলের তারিখ লিখতে হবে। সবকিছু পূরণ করার পর পরবর্তী থাকে ক্লিক করতে হবে।
২৫। শেষ ধাপে আপনি দাতার তথ্য পূরণ করবেন। মানে যার কাছে থেকে জমি কিনছেন এবং যার নামে খতিয়ান প্রস্তুত রয়েছে তার তথ্য পূরণ করবেন এবং সঠিক হোল্ডিং নাম্বার দিবেন।

ই নামজারী আবেদন
এখানে দাতার তথ্য দিয়ে ফরম পূরন করতে হবে

 

২৬। যে সকল ডকুমেন্টসগুলো রয়েছে সেগুলোর স্ক্যান কপি লোড করতে হবে।

 

ই নামজারী আবেদন
দাতার দলিল ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র স্কান করে সংযোজন করতে হবে তারপর আবেদন দাখিল করতে হবে।

২৮। আপলোড করার পর শেষ ধাপে দাখিল অপশনে ক্লিক করতে হবে।
২৯। দাখিল অপশন এ ক্লিক করার পরে অপশন আসবে। আকাশ বিকাশ, রকেট, নগদ অথবা অন্যান্য অপারেটরের মাধ্যমে ৭০ টাকা পেমেন্ট করতে হবে।
৩০। ৭০ টাকা পেমেন্ট করার পর আবেদনপত্র টি প্রস্তুত হয়ে যাবে এবং সেটা ডাউনলোড করবেন।
৩১। ডাউনলোড কৃত  আবেদনপত্রটি এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস একসাথে এসিল্যান্ড অফিসে প্রেরণ করতে হবে।
এসিল্যান্ড অফিস আপনাদের প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো সঠিক আছে কিনা যাচাই-বাছাই এর মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট তারিখে আপনাকে আহবান করা হবে। তারিখে শুনানির মাধ্যমে আপনার খারিজের (Mutation) কার্যক্রমটি সম্পূর্ণ করবেন।

৩২। সবকিছু ঠিকঠাক হওয়ার পরে ডিসিআর জন্য ১১০০ টাকা পেমেন্ট করতে হবে।  ডিসিআর ফি প্রদান করার পরে আপনি আপনার খারিজের সম্পূর্ণ কার্যক্রম সম্পূর্ণ করতে পারবেন।
৩৩। সবশেষে আপনি আপনার ডিসিআর (DCR) এর কপি এবং আপনার নামে খতিয়ান ডাউনলোড করবেন। এরপর তহশীল অফিসে গিয়ে আপনার হোল্ডিং খুলতে পারবেন।

 

উপসংহার

নামজারি করার জন্য উপরে সকল তথ্যগুলো যথাযথভাবে পূরণ করার পর ঠিকভাবে আবেদন করা হলে এসি ল্যান্ড মহোদয় আপনাকে খারিজ অনুমোদন দেবেন। আপনার নামে খতিয়ান প্রস্তুত হবে। এরপরে ভূমি অফিসের মাধ্যমে আপনি নতুন হোল্ডিং খুলতে পারবেন। আপনি এরপর থেকে আপনি আপনার নামে খাজনা প্রদান করতে পারবেন। করতে যদি কোন অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাকে জানাবেন আপনাদের সকল সমস্যার সমাধান করে দেবো। পরবর্তী ডিসিআর কিভাবে ডাউনলোড করতে হয় এবং নিজের নামে কিভাবে  খাজনা (Ld Tax) দেবেন সে সকল পোস্ট করা হবে আপনার অবশ্যই দেখে নিবেন।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*